হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে তাঁর ভাগনি স্টুটগার্টের শর্মি
প্রয়াত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ভাগনি শবনম হায়দার শর্মী৷ যার কাছে এখনও হুমায়ূন আহমেদ রয়ে গেছেন একজন বড় মামা হিসেবে৷ মামার সাহিত্যের একজন ভক্তও তিনি৷ ডয়চে ভেলের সঙ্গে শর্মীর স্মৃতিচারণে উঠে এসেছে বড় মামার নানাদিক৷
পরিবারে হুমায়ূন আহমেদের পরেই ছিলেন তাঁর বোন সুফিয়া হায়দার, যাঁকে হুমায়ূন আহমেদ অনেক বইতে শেফু নামে উল্লেখ করেছেন৷ তাঁর মেয়ে শর্মী স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বলেন, ‘‘কাজিনরা আমরা প্রায় একই বয়সের৷ আর আমরা বড় মামার সঙ্গেই বেশি ঘনিষ্ঠ ছিলাম৷ প্রতি ঈদে আমরা উপহার পেতাম৷ আমরা সবাই নোভা, শিলা প্রায় একসঙ্গেই থাকতাম৷ বড় মামা আমাদের বকা দিলে আমরা যদি কাঁদতাম তখন তিনি আমাদের খুব ভালো কোনো উপহার দিতেন৷ অবশ্য বড় মামা আমাদের খুব একটা দিতেনা না, তবে দিলে আমাদের খুশিই লাগতো কারণ আমরা জানতাম পরে তিনি আমাদের উপহার দেবেন৷ ঈদের সময় নোভা আর আমি একই রকম জামা পেতাম৷

ঈদের জন্য আমি সব কিছু নতুন কিনতাম, তাতে আমার একটি বাক্স থাকতো, আর মামা আমাদের সব কিছু কিনে দিতো৷ মজা হতো ঈদের সেলামি দেওয়ার সময়৷ মামা যার বয়স যত তার দ্বিগুন সেলামি দিতো, মানে আমার বয়স যদি ছয় হতো তাহলে আমি পেতাম ১২ টাকা সেলামি৷”
ঈদের দিন রাতের বেলায় নানার বাসায় যাওয়ার নিয়ম ছিলো বলে স্মরণ করেন জার্মান প্রবাসী শর্মি৷ তখন মামা হুমায়ূন আহমেদ একটি বক্সে সবার নাম লিখে রাখতেন আর একে একে নানু সেই নামগুলো তুলতো৷ সবশেষে যার নাম উঠবে সে একটি পুরস্কার পাবে৷ কোন সময় চকলেট, খেলনা কিংবা টাকা৷ এভাবে আমরা খুব মজা করতাম৷ নিজের বিয়ের সময় নুহাশ পল্লীতে অনুষ্ঠানের কথা মনে করতে গিয়ে শবনম হায়দার শর্মী বলেন, ‘‘সেই সময় মামা আমার জন্য পাল্কির ব্যবস্থা করেছিলেন৷ আমার বিয়ে উপলক্ষে সেই প্রথম আমার পাল্কিতে চড়া৷”
হুমায়ূন আহমেদের মাধ্যমে সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গেও পরিচিত হয়েছেন শর্মী৷ তবে হুমায়ূন আহমেদ তার কাছে বড় মামাই হয়ে থেকেছেন, সাহিত্যিক হিসেবে নয়৷ যদিও তাঁর সব লেখা পড়েছেন শর্মী৷ হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্য সম্পর্কে তার মূল্যায়ন, ‘‘খুবই সহজ লেখা, কিন্তু তার ভেতরে অনেক গভীর কথা থাকে৷ তার লেখা আমার কাছে চুম্বকের মত লাগে৷”
সাক্ষাৎকার: রিয়াজুল ইসলাম
সম্পাদনা: জাহিদুল হক
Source: Deutsche Welle.
Adnan Sadeque
http://bsaagweb.de/germany-diary-adnan-sadeque
লেখক পরিচয়ঃ
http://bsaagweb.de/adnan-sadeque
Latest posts by Adnan Sadeque (see all)
- জার্মানির ডায়েরিঃ২৪ “ফিহা এবং কিছু সমীকরণ” - November 30, 2018
- জার্মানির পথেঃ১৬ জার্মানিতে মাইগ্রেশন, আসছে চমকপ্রদ নতুন আইন, ২০১৮ - November 21, 2018
- জার্মানিঃ “Das Beste, oder nichts” - January 23, 2018